বুধবার, ১৫ এপ্রিল, ২০০৯

শুভনববর্ষ


!!! শুভনববর্ষ ১৪১৬ !!!

...আপনার জীবন হয়ে উঠুক মঙ্গলময় এবং আনন্দময়...


আমার দূরভাষ যন্ত্রে পাওয়া কিছু ছোট্ট সংবাদ বার্তা এখানে দিলামঃ

নতুন বছর এলো ছুটে,

সকল বাঁধা গেলো টুটে,

বছরটা যাক তোমার ভাল

মুছিয়ে আঁধার ফুটুক আলো

নতুন বছর দারূন কাটুক,

এই আশা মনে থাকুক...




নব প্রভাতের নব রবির কিরণে

নব পাখির গুঞ্জনে

নব প্রাণের আশায়

নব ভালবাসায়

তোমাকে জানাই নব বর্ষের প্রীতি, শুভেচ্ছা, অভিনন্দন ও ভালবাসা...




পুরোণো যত হতাশা দুঃখ অবসাদ,

নতুন বছর এগুলোকে করুক ধুলিস্যাৎ

সুখ আনন্দে মুছে যাক যাতনা

শুভনববর্ষে সবার জন্যে শুভ কামনা...





ভাল থাকুন

সুস্থ থাকুন

লিখতে থাকুন

...ভগবান সবার মঙ্গল করুন...

শুক্রবার, ৩ এপ্রিল, ২০০৯

সংবাদ।

আজ মনটা বড়ই মেঘলা; আকাশটাও। সেই সকাল থেকেই। দিনটা যেন কোনমতেই চলছে না। ঠিক ওই লাল ফুল ফুল কাপড়ে ঢাকা টেলিফোনটার মত। হুম... কি করা যায়? সেটাই ভাবছিলাম। হঠাত্‌ দড়জায় কড়া নাড়ার শব্দ। আরাম কেদারা ছেড়ে ওঠার ইচ্ছে তো ছিলই না, তবু উঠতেই হল। হাতের কাগজটা টেবিলে রেখে উঠলাম। ঘড়িতে তখন ঠিক আড়াইটা বাজে। আমার কলিংবেলটা কিচিরমিচির করে উঠলো।

“যাচ্ছি।”

দড়জা খুলে যা দেখলাম তা দেখার একদম ইচ্ছে ছিল না। ভাবতেই পারিনি। দড়জায় দাড়িয়ে আমার ছোটবেলার বন্ধু, কিংশুক; মানে বুলু। আমাদের পাড়ার ছেলে। আমাদের পাশের বাড়ির দোয়েল বুলুর মামাত্তো বোন। ছোটবেলা থেকেই আমাদের বাড়িতে ওর আসা যাওয়া ছিল। স্নেহকাকু খুব স্নেহ করতেন ওকে। না, সত্যি স্নেহ করতেন। স্নেহকাকু যখনই বাজারে যেতেন আমাদের জন্যে লজেঞ্চুস আনতেন। একটা আমার, একটা তাতাইয়ের, একটা দোয়েলের আর ঠিক দুটো বুলুর জন্যে। কেন কে জানে। তবে খুব ভালবাসতেন উনি বুলুকে। খেলাধুলাতেও বুলু ছিল এগিয়ে। তাতাই বল করতো, বুলু ব্যাট করতো আর আমি আর দোয়েল ফিল্ডিং করতাম। মানে, বেশিরভাগ সময় তাই হোত। আমরা কখনই অভিযোগ করিনি। আসলে জানতাম না যে ও বেশি ব্যাট করে ফেলছে এবং এটা করা ঠিক না – আমাদেরও তো ব্যাট করতে হবে! আসলে এই কথাটা আমরা কেউই জানতাম না। জেনেছিলাম বড় হয়ে যে নিজেরটুকু ছিনিয়ে নিতে হয়। কেউ দিয়ে দেয় না। পুরোপুরি বুঝলাম যখন কলেজ থেকে ফিরে এসে দেখলাম যে তাতাই আর দোয়েলের বিয়ে, আমাদের বাড়ির উঠোনে। কি ফুর্তি সবার। বুলুতো যেন সাপের পাঁচ পা দেখেছে – মনে হচ্ছিল ওই দোয়েলের সেই মরে যাওয়া ভাই। দোয়েলের বাবা – মা, আমার বাবা, স্নেহকাকু আর তাতাইয়ের বাবা – মা সব্বাই নাকি পিকনিকে যাবে ওদের দুজনকে নিয়ে! আমার জন্যে অপেক্ষা করা হচ্ছিল। কি আদিক্ষেতা, বলো। সময়ে বলতে পারিনি; যা নিজের ছিল তা কোনদিন মুখ ফুটে চাইতে পারিনি। ভেবেছি তা তো আছেই – থাকবে। কিন্তু এমন হয়নি। মুখ বুজে পিকনিকে গিয়েছিলাম। টমেটো, শশা, কাঁচা লঙ্কা, পেয়াজ আর বাঁধাকপির পাতা দিয়ে সুস্বাদু স্যালাডও বানিয়েছিলাম। অদৃষ্টের দোহাই দিয়ে সব মেনেও নিয়েছিলাম। কষ্ট হয়েছিল যখন ফেরাযাত্রার দিন হঠাত্‌ই দোয়েল আমার পা ছুঁয়ে সবার সামনে আমায় দাদা বললো! ভোম্বলদা! ধুর্‌, দাদা না ছাই! এতদিন কোথায় ছিল এই বোনটা আমার? যখন মায়ের আলতা চুরি করে এনে পায়ে লাগিয়ে দিতাম; যখন স্নেহকাকুর দেওয়া লজেন্সটা বা বাবার আনা নতুন কলমটা হাসিমুখে হাতে তুলে দিতাম; যখন এই হতভাগা তাতাইয়ের মার থেকে ওকে বাঁচাতাম, তখন তো কোনোদিন একবারের মতোও দাদা বলে ডাকেনি। যা শালা! হাত তুলে আটকে দিতেই দুহাতে জড়িয়ে ধরে কাঁদলো। এতদিন পর, এই শেষ সময়ে এক সেকেন্ডের জন্যে না কাঁদলে কি হোত না? যখন নিজে থেকে বুকে জড়িয়ে ধরেছিলাম, তখন তো এক মিনিটের বেশি এক সেকেন্ডও থাকেনি। “মা দেখে ফেলবে; বাবা দেখে ফেলবে।” – আমার ঠাকুরদাদা দেখে ফেলবে!! এখন? এখন তো পাড়াশুদ্ধ মানুষ দাঁড়িয়ে। এখন কই, লজ্জা করছে না? ওর কান্না দেখে ওর মা আরো কাঁদলেন। যাই হোক, ওরা কোলকাতা চলে যাবার পর আমিও জীবনকে একেবারে ত্যাগ করে দিয়েছিলাম। বুলু চলে গেল ইম্ফল, ডাক্তারি পড়তে। আমি রয়ে গেলাম একা। মন্টুর দোকানে চা খেতাম; হরিদাসপুরের মাঠ চষে বেড়াতাম; আলুকাবলি খেতাম আর চুটিয়ে সিনেমা দেখতাম। একা ছিলাম, কিন্তু সুখে ছিলাম। হয়তো। অনেকদিন পরে একটা কোলকাতার মোবাইল নম্বর থেকে একটা ফোনও এসেছিল। তাতাই হঠাত্‌ করেই তথাগত হয়ে গিয়েছিল। আর দোয়েল হয়ে গেল সোনাই! কথা বলতে হলো তাই বললাম। বললাম স্নেহকাকুর কথা। তাতাই কিছু বললো না। দোয়েল তো উনি নেই শুনে কেঁদেই অস্থির। বললাম বলাই কাকা আর মিনু মাসিও মারা গেছে। বললাম দোয়েলদের বাড়ীরই জল্পাই গাছ, কদম গাছ আর দু চারটে সুপুরি গাছ কাটা পড়বে নতুন রেল লাইনের জন্যে জায়গা করে দিতে। আরো অনেক কথা বলেছিলাম – আজ আর মনে নেই। যা মনে আছে তা হলো যে ও বলেছিল হরিদাসপুরে আসতে চায়, কিন্তু তথাগতর অফিসে ছুটি নেই বলে আসতে পারছে না। আমি শুধু ‘আচ্ছা’ বলে রেখে দিয়েছিলাম। সেই শেষ কথা। সবসময় ভাবতাম কোথাও ভুল হয়েছে। তাকে দূরে সরিয়ে দিয়েছি। কিন্তু, সেও তো আমার জন্যে এক দন্ডও অপেক্ষা করে নি। ঠিক টাকার পেছন পেছন চলে গেল। একবার ভাবলোও না আমার কথা – আমাদের কথা! ধোকেবাজ় কহিঁকা।

এর পর গত এতোগুলো বছর ভাবিনি ওদের কথা। বুলুর কথাও না। সে ইম্ফল থেকে সোজা যে বিলেত গিয়েছিল, তার পর আর আজ এই দেখা।

“একটা খবর আছে রে। ভেতরে আসবো?”

যেন বাজ পরলো আর আমি এক ঝটকায় হাজার মাইল দূরে এই জায়গায় এসে পরলাম! ভুলেই গিয়েছিলাম বুলু দড়জায় দাঁড়িয়ে আছে। আমি ওকে ভেতরে ঢুকতে বলে জানালাটা খুলে দিলাম। একটু আলো না হয় আসুক ঘরে। সকাল থেকে আর খোলাই হয় নি। ও কেমন যেন ভয়ে ভয়ে এসে বসলো।

“কি খাবি? কোত্থেকে আসছিস?”

“দোয়েল আর নেই রে।”

“নেই মানে?”

“নেই মানে নেই। কি বললে বুঝবি হতভাগা? মারা গেছে। প্রেগ্ন্যান্ট ছিল। চতুর্থ মাস চলছিল। অফিস যাবার সময় কোলকাতার চক্ররেল থেকে পা পিছলে পরে রেলের তলাতেই তলিয়ে গেল। আমি জানলাম কালকে। তোকে ফোনে পেলাম না। তাই নিজেই এলাম বলতে।

“তাতাইটা বখাটে গেছে। চাকরি বাকরি নেই আর। বউয়ের পয়শায় চলতো। তাই তো এই অবস্থাতেও রোজ ট্রেনে করে দোয়েলকেই অফিসে যেতে হতো। অফিস করতে হতো। টাকা রোজগার করে ঘর চালাতে হতো। ঘটনাটা ছেপেছিল দৈনিকে, পরশুদিন। দেখিসনি নাকি? কিরে, শুনছিস কি বলছি? কিরে? এই ভোম্বল – বল কিছু। চুপ করে কেন রে?”

বুলু এক শ্বাসে বলে গেল কথাগুল। কিছু শুনলাম, কিছু শুনলাম না। কিছু বুঝলাম, কিছু বুঝলাম না। কিছুই বলার ছিল না আমার।তাই কিছু বললাম না।

বাংলা ভাষা

বাংলা শুনলেই আমার জ্বর আসতো। এখোনো একটা ভয় রয়েই গেছে। তবুও এই বাংলা ভাষাই আমার প্রিয়। কত কবিতা, কত গান, কত গল্প লিখেছি আমি বাংলায়। সেই পুরাতন দিন, যখন পাতার পর পাতা চিঠি লিখতাম আমার প্রিয়তমাকে, কবিতা লিখে পাঠাতাম বাংলায়। এবার আবার সুযোগ পেয়েছি বাংলায় লেখার। এ সুযোগ আমি ছাড়ব না।

আমার বাড়ি

আমার বাড়ি আগরতলায়, ত্রিপুরার রাজধানী। ভারতবর্ষের উত্তর পূর্ব প্রান্তের ছোট্ট রাজ্য, ত্রিপুরা। জাতি উপজাতি মিলে মিশে থাকি আমরা। আমার বাড়ি ওখানে। ছোট্ট আমাদের শহর, আগরতলা। খুব সুন্দর জায়গা। আমার সবচাইতে প্রিয় শহর। তোমরা এসো - দেখে যেয়ো আমার বাড়ি।

ব্লগ সম্বন্ধীয়

এটা আমার প্রথম বাংলা ব্লগ। ব্লগ তো আমি অনেক লিখি, তবে বাংলায় এই প্রথম প্রচেস্টা। খুব ইচ্ছে ছিল বাংলায় লেখার। অনেক সফট্যার ঘাটা ঘাটি করে পেলাম এই উৎকৃসষ্ট অভ্র কিবোর্ড। এবার আমিও লিখব – বাংলা ভাষায়। মন খুলে, প্রাণ খুলে লিখব। আশা করি তোমরা পড়বে এবং উৎসাহ দেবে। ধন্যবাদ।

আমার কথা

আমার নাম তন্ময়।
আমি ভালবাসি লিখতে – কবিতা, গান, গল্প।
আর ভালবাসি নতুন নতুন মানুষের সাথে বন্ধুত্য করতে।
জীবনকে ভালবাসি, এবং হাসিমুখে অভিনন্দন জানাই জীবনের প্রতিটি মোড়কে।
সব কাজ ভিন্ন ভাবে করতে চাই – কিন্তু বিভিন্ন কাজ করেই দিন যাপন করি।
ব্লগ লেখা শুরু ক’বছর আগে, তবে বাংলা ব্লগ এই প্রথম। আমার ভালো লাগে ব্লগ লিখতে। এখানে আমি একা হলেও, আমি প্রাণ খুলে লিখতে পারি। মনের কথা গোপন রাখার কোনো দরকার হয় না। নিজেকে উজাড় করে লিখতে পারি। এটা ছাড়াও আমার আর কয়েকটা ব্লগ আছে, যাদের লিঙ্ক দেওয়া আছে এখানে।
আমার লেখা পড়ে, যদি তোমার ভালো লাগে, তো খুশি হবো। মন্তব্য করতে ভুলো না যেন!

এই যে। কই চল্লেন? এদিকে আসুন।

আমার দুটো কথাঃ

ভালবাসলে যখন তুমি আমাকে, তবে কেন বলো দূরে সরে থাক
আজকের এই জোছনা ভরা রাত, আর জীবনে ফিরে আসবে নাকো।

  © Blogger template 'Personal Blog' by Ourblogtemplates.com 2008

একদম ওপরে চলুন।