বৃহস্পতিবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০০৯

আমি মৈত্রী...

আমি? আমি প্রেম
আমি উদার, অসীম, মুক্ত ভালবাসা –
আমার হৃদয়ে এখনো রয়েছে,
মহামিলনের আশা।
আমার হাতে, মাথায়, চোখে
নব প্রভাতের গান
আজও। আমি বেঁচে আছি,
জীবন আমার মান, অভিমান
অহংকারে ঘেরা
আজও আমি সেরা।
আমার মধ্যে আজও রয়েছে
প্রভাতের প্রভারাশী
আমার মধ্যে রয়েছে হরি –
তাই আমি হরিদাসি।
হাঁসি? আজও আছে
আমার আঁচলে কোথাও
তারই মাঝে লুকিয়ে আছে
গোপন কোনো ব্যথা-ও।
যে ব্যথা – কাউকে যায় না বলা
শুধুই জলে ভাসিয়ে চিবুক,
শুধুই গন্ধে ভরিয়ে এ’বুক,
নিশ্চুপ পথ চলা।
আমি? আজ মুক্ত,
আজ নেই কোনো হাতের ইসারায়
নিজেকে উজার করার ক্ষিদে।
আজ সবই সুপ্ত, গভীর বাসনায়।
আমার প্রতি শ্বাসে আজ
কেবলই আমার বাঁচা
আমার ভেতরে, আমার বাহির
আমারই গড়া খাঁচা –
আর সেখানেই থাকি আমি –
দূর হতে দেখি একলা আকাশ
মেঘ নিয়ে গেছে উড়িয়ে বাতাস;
তারই বুকে দেখি তারাদের বাস –
যখন আঁধার আসে নামি।
আমি তবু রই শান্ত
সহস্রবার পথ চলে চলে
আজ হয়েছে পরিশ্রান্ত।
তবু কি গিয়েছি থেমে?
কাটিয়েছি কত ঘুমহীন রাত
জীবনে সয়েছি কত প্রতিঘাত
কত আঁধারে বাড়িয়েছি হাত
ধরেনিতো কেউ নেমে!
আমি বিশ্বাস, আমি সত্য
আমি চঞ্চল, আমি নিত্য
আমি নগের চূড়ায় বসিয়া দেখেছি
প্রেমের নগ্ন নৃত্য।
আমি পেয়েছি সবই, তাই
চাওয়ার ছিল না কিছুই।
আমি চাইনি কখনো –
চাইনি কারো দান, আমি
চাইনি কারো গান
হতে। যা পেয়েছি তাই নিয়ে আমি
সুখেই রয়েছি এখনো।
তবু আমার সভ্য জগতে
হঠাত্‌ এ’দিন আমারই কেউ
হাত বাড়িয়ে ডাকলো আমায়
বললো, “সাথে যাবে?”
বুঝিনি সেদিন, কে সে ছিল
প্রাণেতে আমার এলো কিনা এলো
নাকি দূর হতে ছলে শুধু গেল
সত্যি কি মোর হবে?
খেলে গেল সে
নিদারূণ খেলা, আমার
প্রাণেরে নিয়ে। বুঝলো না
মোরে একবার!
খেলার পুতুল, যেন আমি তার!
ছলে গেল, চলে গেল –
বলে গেল, “সাথে রব।”
জানি সে মিথ্যে;
তবু মনে ভাবি –
আমি তো বলিনি, সেই
বলে গেল সবই,
জানলো না মোর প্রাণ কি চায়
জানলো না –
ভালবাসা বড় দায়।
কাপুরুষতার সীমা পার করে
দূরে সরে গেল হারিয়ে;
দেখলো না ফিরে, রয়েছি দুয়ারে
আজও আমি হাত বাড়িয়ে!
আমি প্রেম, আমি মৈত্রী
সদাপ্রসন্ন, আমি ধরিত্রী।
আমাতে রয়েছে ত্যাগ –
আমি যে নারী, সহ্যের সীমা
আমি যে পারি সব!
আমাতে বেদনার লেশটুকু নেই
আমার যা আছে সবই আমি দিই।
যা ছিল আমার, নিয়ে গেছে সেইকরি নাতো কলরব।
তবু আমি ভুল
তোমার, সবার চোখে
পারিনি যে আমি
দাঁড়াতে, তারে রূখে!
হয়তো সেদিন
প্রেম এসেছিল বুকে –
ভেবেছিলাম, তারই সাথে
থাকবো সুখে।
তাই, ক্ষমা করো আজ মোরে
আপ্ন ভুলায়ে, আপ্ন ভেবেছি তারে
ভেবেছিনু সে আকাশ প্রমাণ
এত বড় বুক, ভরে আছে প্রাণ –
কিন্তু বুঝিনি সব মেঘ তরে
তার যে সমান টান।
ভাল কি বেসেছে সে, কভু?
নাকি আরেকটা ফুল হিসেবে
আমার গন্ধ কেবল শুঁকেছে?
হয়তো মনের ভুল আমার।
তবু আমি প্রেম
উদার, আমি মুক্ত ভালবাসা,
আমার মননে, প্রভাত স্বপনে
মহামিলনের আশা।
জানি আসবে না সে ফিরে –
তবু বাঁধি ঘর – আকাশে, বাতাসে
সাগরে, বালুচরে,
- একবার তার দেখা পা’ব বলে
- একবার তার ছোঁয়া পা’ব বলে
- একবার সির নামাবো তার চরণে –
- একবার তারে জড়াবো এ’ বুকে
- একবার মোরা হাসবো সুখে
- একবার, যদি একবার শুধু
- - ফিরে আসে মোর জীবনে।।

২৪/০৩/২০০৪
মালঞ্চনগর, আগরতলা।
{ অনেক বছর আগে আমার লেখা এই কবিতা। মৈত্রী, আমার স্ত্রী। তখন, প্রেমিকা। যেন মৈত্রী কিছু বলতে চাইছিল। এই কবিতা তারই বহিঃপ্রকাশ। }

শুক্রবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০০৯

বিবাহবার্ষিকী

ছবিতে ক্লিক করে বড় করুন।

বুধবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০০৯

শুভ মকর শঙ্ক্রান্তি


মঙ্গলবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০০৯

ব্লগের ধান্দা কি মন্দা চলছে?

লেখা এবং পড়া দুটোই একসাথে হাতে হাত ধরে চলা ফেরা করে। মানে আপনার পড়া ঠিক ততটাই জরুরি, যতটা লেখা। নিয়মিত না পড়লে লেখা কষ্টকর হয়ে যায়। তাই আমি প্রায়ই বাংলা ব্লগ বা অন্যান্য ওয়েবসাইট পড়ি। ইদানিং দেখছি যে বেশ কয়েকটি ব্লগ এমন আছে যাতে বহুদিন যাবত নতুন কোনো লেখা লিখা হয়নি। অনেকগুলো ব্লগ এমন আছে, যা খুব সুন্দর করে শুরু করা হয়েছিল, কিন্তু এখন আর সেগুলোতে লেখা হয় না। অনেক ব্লগ এমনি এমনি পরে আছে, যেন অবিভাবকহীন। কেন? জানি না। হয়তো আমি বাংলা ব্লগের জগতে যতটা আগ্রহ নিয়ে এসেছি, ততটা আগ্রহ এখন আর এখানে নেই! জানি না, তবে যখন দেখি যে মার্চ ২০০৭ বা আগস্ট ২০০৮ এর পরে আর কোন লেখা হয়নি, তখন খুব কস্ট হয়। এর আরেকটা কারন হতে পারে যে আমার মত এত সময় কারো নেই যে ব্লগ লিখে লিখে নস্ট করবে। হা হা হা হা। সে যাই হোক, মোদ্দা কথাটা হল যে বেশ কিছু ব্লগ এখন আর আপডেট করা হচ্ছে না। আমার ব্লগে যে সব লিঙ্ক লাগিয়েছি, সেগুলোর মদ্ধেও কটা ব্লগ আছে যেখানে এখন আর লেখা হয় না।

এই তো হল আমার পড়া ব্লগ আপডেট। এবার কিছু ভাল খবর দিই। হ্যাঁ, কিছু খবর আছে বৈকি।

কিছুদিন আগে আমি অন্য একটি ব্লগে একটি ইংরেজি গল্প লেখার প্রতিযোগিতায় আমার একটা গল্প ছাপাই। এক মাসের এই প্রতিযোগিতায় অনেক লেখক লেখিকা গল্প লিখেছেন, এবং শেষ পর্যন্ত ৬ জনকে বেছে নেওয়া হয়েছে সবার চেয়ে ভাল লেখার জন্যে এবং একটি করে ব্যাজ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩ জন হয়েছেন প্রথম, দ্বীতিয় ও তৃতীয়। আমার লেখাটা প্রথম ৬ জনের মধ্যে নেই, তবে পড়ুয়াদের ভোটে সবচাইতে জনপ্রীয় হয়েছে আমার লেখাটা এবং আমাকেও একটা ব্যাজ দেওয়া হয়েছে, যেটা আমি লাগিয়েছি আমার ইংরেজি গল্প/কবিতা-র ব্লগে। যদি কারো ইচ্ছে হয় তো এই লিঙ্কে গিয়ে পড়তে পারেন আমার লেখা ওই গল্প ও আরো অন্য ইংরেজি, হিন্দি বা বাংলা লেখা। ভাল লাগলে জানাবেন।

ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন।

বুধবার, ৭ জানুয়ারী, ২০০৯

আমি নোয়াখালি থেকে বলছি...

নোয়াখালি বাংলাদেশের এক বৃহত্‌ জেলা। সেখানের ভাষা যেমন শক্ত, মানুষের মন তেমনি নরম। আমার বাবা নোয়াখালির মানুষ, এবং সেই সুত্রে আমিও। আমার বাড়িতে মহা বর্ণবিদ্দেষ। আমার মা বাংলাদেশের আরেকটি জেলা, সিলেটের মানুষ, যদিও মার জন্ম এবং বড় হওয়া ত্রিপুরার কৈলাশহরে। মা সিলেটি এবং বাবা নোয়াখালি; তাই আমার এক বন্ধু ছোটবেলা আমাকে বলতো আমি নাকি ‘নোয়াসিলেখালিটি’। হি হি হি। সে যাই হোক। আমি দুটো ভাষাই মোটামুটি জানি। আজকের এই গল্প দুটি নোয়াখালি নিয়ে। সিলেটি নিয়ে পরে মাতামাতি করা যাবে।

অনেক দিন আগে এটা পড়েছিলাম, খুব সম্ভবত আজকাল পত্রিকার রবিবাসরীয়তে। ঘটনাটা ঘটেছিল একজন লেখকের সাথে। উনার নামটাতো আজ আর মনে নেই। গল্পটা যতটুকু মনে আছে, বলছি। তিনি একবার গিয়ে পৌছলেন নোয়াখালির কোনো এক গ্রামে। দুপুর বেলা বাস থেকে নেমেছেন, খুব পরিস্রান্ত। নেমেই দেখলেন বাস স্ট্যান্ডের পাশে একটি ছোট্ট ফুটফুটে মেয়ে দাঁড়িয়ে। দেখে উনার বেশ লাগলো।

“তোমার নাম কি?” উনি এগিয়ে গিয়ে জিগেস করলেন।

“আঁর নাঁ নি? আঁর নাঁ হোঁতিয়াঁ।” বলেই মেয়েটি এক দৌড়ে হারিয়ে গেল।

লেখক হাঁ করে তাকিয়ে রইলেন। কিছুতেই বোধগম্য হোল না যে মেয়েটি কি বললো। তার পর অনেকদিন তিনি ছিলেন ওই গ্রামে, কিন্তু ওই মেয়েটিকে কিছুতেই আর খুঁজে পেলেন না। কাউকে যে জিগেস করবেন, সেই ক্ষমতাও তো নেই; যা উচ্চারণ সেই মেয়েটি করেছিল, তিনি তা পারবেন কেন? অবশ্য নোয়াখালি ছাড়ার কিছুদিন আগে তিনি নিজের সেই প্রশ্নের জবাব পেয়েছিলেন। তিনি জানতে পেরেছিলেন যে সেই ছোট্ট মেয়েটি সেদিন তার প্রশ্নের জবাবে কি বলেছিল। সেটা অনেকটা এইরকম –

“আমার নাম নাকি? আমার নাম প্রতীমা।”

হা হা হা। ভাল না? হ্যাঁ। আমাদের ভাষাটাই এমন। তোমরা না বুঝলে আমাদের কি করার আছে? এসো, আমাদের সাথে থাকো, শিদল পোড়া আর পান্তা ভাত খাও কিছুদিন আর আমাদের মত পরিস্রম করো, তাহলে বছর খানেকের মধ্যে অবশ্যই শিখে ফেলতে পারবে।

যাই হোক। এবার একখানা গল্প বলি। এই গল্পটি আমি আমার বাবার মুখে শুনেছি এবং কম করেও শ’খানেক যায়গায় শুনিয়ে বাহবা কুড়িয়েছি। খুব সুন্দর একটি ছোট্ট উপাক্ষান। বলি, শোনো।

বাংলাদেশের ছোট ছোট গ্রামগুলো সব সুন্দর সুন্দর। গ্রামে গঞ্জে সব্বাই সবাইকে চেনে। গ্রামে সবই আছে – কবিরাজ, মন্দির, মসজিদ, ইস্কুল, হাট, পোস্ট অফিশ আরো কি কি। তবে সব কিছুই খানিক দূরে দূরে। যে সময়ের এই গল্প, সেই সময়ে না ছিল রিক্সা, না ছিল বাস, না ছিল ট্রাম। ছোট বড় সব মানুষই রাস্তা পায়ে হেঁটেই পার হতো। এমনই এক গ্রামে সেদিন ছিল ফল বের হবার দিন – মানে পরিক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হবে ইস্কুলে। তাই সকাল থেকেই সব বাড়ি ঘরেই পূজা একটু বেশিই হলো। নামাজটাও সেদিন একটু বেশিক্ষনই চললো। ছেলেমেয়ের ফল বেরোবে, সেকি চাট্টিখানি কথা নাকি? হুম...

একটি ছোট্ট ছেলে তার ফল নিয়ে যেই না ক্লাসঘর থেকে বের হয়েছে, অমনি পাশের ক্লাসের রহিম স্যারের সাথে দেখা। অমনি প্রশ্ন এলো, “কিয়ারে, হাঁশ কৈচ্চতনি?” (কি রে পাশ করেছিস নাকি?) রহিম স্যারকে উত্তর দিয়েই সে ছুটে বেড়িয়ে এল, যেন আব্দুল মাস্টার বা নিমাই স্যারের প্রশ্নের সম্মুখিন হতে না হয়। কিন্তু তাতে কি আর রেহাই আছে? আগেই বলা হয়েছে যে গ্রামে সবাই সবাই কে চেনে। নাম না জানলেও এটা কার ছেলে বা কার মেয়ে তা যে কেউ বলে দিতে পারে। তাই যার সাথে দেখা, সেই একবার করে জিগেস করে, “কিয়ারে, হাঁশ কৈচ্চতনি?” ইস্কুল থেকে বাড়ি প্রায় দুই ক্রোশ পথ। পথে যার সাথেই দেখা, তার মুখেই সে এক প্রশ্ন। সবার প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে অতিষ্ঠপ্রাণপ্রায় হয়ে সেই ছোট্ট ছেলেটি বাড়ি পৌছয়। বাড়িতে ঢুকতেই বাবার সাথে দেখা হলো। বাবা ছেলেকে কাছে পেয়ে খুশিতে কাছে ডেকে আনেন। আদর করে ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে অনেক আশার সাথে জিগেস করলেন, “কিয়ারে, হাঁশ কৈচ্চতনি?”

আর পায় কে? ছোট্ট ছেলেটির মাথা গরম হয়ে যায়, এবং তার মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসে এই কথাগুলো –

“হাঁশ কৈচ্চতনি, হাঁশ কৈচ্চতনি। হেতারগো বাড়ির মন্টু হাঁশ কৈচ্চে নি? হেতারা আঁরে হাল্লে টানি ধরি লামাই দেয়, আঁই কোনোমতে রইগেসিগৈ।”

কি, বুঝলে সে কি বলেছিল?

হেহেহে। এই ছিল সেই ছেলের জবাব, শুদ্ধ বাংলা ভাষায় –

“পাশ করেছিস নাকি, পাশ করেছিস নাকি। ওদের বাড়ির মন্টু পাশ করেছে নাকি? ওরা আমাকে পারলে টেনে ধরে নামিয়ে দেয়, আমি কোনোভাবে রয়ে গেছি।”
মানে ওর পরিক্ষার ফল এমন হয়েছে যে মাস্টারমশায়রা ওকে নিচের ক্লাসে পাঠিয়ে দিতে চাইছিলেন। ও জোর করে নিজের ক্লাসেই রয়ে গেছে। মন্টুও তো পাশ করেনি। তাহলে?

মঙ্গলবার, ৬ জানুয়ারী, ২০০৯

আলো, আর মন্দ নয়

ছবিতে ক্লিক করে বড় করুন।

শনিবার, ৩ জানুয়ারী, ২০০৯

কৌতুক গল্প

ছোটবেলা মা বাবা এবং বন্ধু বান্ধবের মুখে অনেক সুন্দর সুন্দর কৌতুক শুনেছি এবং প্রাণ খুলে হেসেছি। এই ব্লগে লেখা এটা প্রথম কৌতুক। অনেক পুরোনো বলে সবচাইতে আগে ছাপাচ্ছি। আশা করি ভাল লাগবে।


আমি হাঁটতে বেড়িয়েছি। রাস্তাঘাটে বেরোলে আমরা প্রায়ই দেখে থাকি বিভিন্ন দেয়ালে বিভিন্ন লেখা লেখা রয়েছে। কেউ উনার বাড়ির কুকুর হইতে সাবধান করতে পোস্টার লাগিয়েছেন, আবার কেউ উনার দেয়ালে যেন পোস্টার লাগানো না হয়, তার জন্যে নিজেই এক পোস্টার সেঁটে দিয়েছেন। এমনই এক দেয়ালের গায়ে লেখা ছিল এই কথাগুলোঃ


আমরা প্রায়ই দেখে থাকি যে অনেকেই প্রাকৃতীক টান সহ্য করতে না পেরে যেখানে সেখানে যেমন গাছের নিচে, গাড়ির পাশে, নর্দমাতে বা দেয়ালের গোড়ায় বসে পড়েন বা দাঁড়িয়ে যান। এই অপরিহার্য অবস্থার কথা ভেবেই হয়তো এই দেয়ালটুকুর গায়ে লেখাটা লেখা হয়েছিল। তাতে কিছু লাভ হয়েছে কিনা বলা মুষ্কিল, তবে কিছুদিন পরে দেখা গেল যে যা না করার জন্যে এতবড় পোস্টার লাগানো, সেই কাজ আরো বেড়েই গেল এবং দেয়ালের পাশ দিয়ে যাতায়াত করাই হয়ে উঠলো দূরহ। তাই লেখক ঠিক করলেন যে নিজেই তদন্তে নামবেন।

তিনি যখন দেয়ালের পাশে এসে দাড়ালেন কি চলছে তা দেখতে, অমনি উনার চক্ষু চড়কগাছ! একি, লেখাটা তো পুরোপুরিই পাল্টে গেছে! কোনো মহাপূরুষ তার লেখার উপরে নিজের বুদ্ধিমত্তার পরিচয় রেখে গেছে এবং উনার লেখাটা এখন পাল্টে দাড়িয়েছে এইঃ



এরপর ওখানে কি হলো আর কেউ জানে না; আর জানলেও কখনো কথাটা দুকান করেনি। তাই আমিও আর আপনাদের জানাতে পারবো না। চলুন এগিয়ে চলি।

কিছুদুর চলার পর, পাওয়া গেল একখানা কবরস্থান। ওই যেখানে মৃত্যুর পর মানুষের ঘর করে রেখে দেওয়া হয়, সেই যায়গা। সাধারণত আমি বিশেষ সময় কাটাই না স্মশানভূমি বা কবরস্থানে। তাই দ্রুত পায়ে চল্লাম। এই লেখাটি দেখা গেল, মূল দড়জার পাশের দেয়ালে। দাড়াতেই হল!



আমার প্রশ্নঃ যদি বহিরাগতদের জন্যে বাহন রাখার ব্যাবস্থা না করা হয়ে থাকে, তবে কি এখানকার বসবাসকারিদের বাহনের জন্যে করা হয়েছে? আমি ঠিক জানি না, তবে যদি এনারাই রাত্তির বেলা নিজেদের বাহন সম্বল করে ভ্রমনে বের হন, তবে আর এখানে থাকার বিশেষ প্রয়োজন বোধ করছিনা। এবার আপনারাও কেটে পরুন। পরে আবার দেখা হবে, রাস্তার পাশে, বা সবুজ ঘাসে কোথাও।

কি আনন্দ!

বৃহস্পতিবার, ১ জানুয়ারী, ২০০৯

বৈঠা হারানো আমার ভাঙা নৌকা।

ছবিতে ক্লিক করে বড় করুন।

শুভকামনা

ছবিতে ক্লিক করে বড় করুন।

ভূমিকা

ওম নমঃ ভগবতে বাসুদেবায়


সুকান্ত ভট্টাচার্যের এই দুটি লাইন মনে পড়ে গেল।সম্ভবত উনার লেখা প্রথম কটা লাইন। আমার লেখা এটাই প্রথম বাংলা ব্লগ। আমি বলে বোঝাতে পারবো না আমার কত ভাল লাগছে বাংলায় লিখতে পেরে। যাই হোক। শেষ পর্যন্ত ব্লগটা তৈরি করা গেল। কিছুটা খাটতে হয়েছে – কিন্তু অন্যান্য কয়েকজন ভিনদেশীয় ব্লগার বন্ধুদের এবং আমার স্ত্রী, মৈত্রীর দৌলতে এখন এই ব্লগটা মোটামুটি তৈরি। আজ ২০০৯-এর প্রথম সকালে এই ব্লগটার উন্মোচন করতে পেরে আমার খুব ভাল লাগছে। মনে হচ্ছে আমি নতুন করে বাংলা লেখা শিখছি। আমি কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই অভ্র কিবোর্ডের জন্মদাতাদের। হয়তো এই সফটওয়ার না থাকলে আমি কখনই বাংলায় ব্লগ লেখার সাহস করতাম না। ধন্যবাদ আপনাদের। প্রায় পনেরদিন আগে আমি অভ্র কিবোর্ডের সাথে পরিচিত হই। তখনই ঠিক করে নিই যে আমি বাংলায় ব্লগ লিখবই। এই কদিন ব্লগের জন্যে সঠিক টেমপ্লেট খুঁজতে, ব্লগের নাম ঠিক করতে,ওপরের ছবিটা বানাতে এবং ব্লগের টেমপ্লেটটা এডিট করতে লেগেছে। এখনও কিছু কাজ বাকি আছে, তবে বেশিরভাগ কাজই শেষ। তাই আজ এই ব্লগটা পাবলিশ করা হচ্ছে। ধিরে ধিরে আরো লেখা হবে – আরো লেখা পোস্ট করা হবে। আপনাদের ভাল লাগলে খুশি হব।

একটা কথা যেটা না বললে এই ভূমিকা শেষ করা যাবে না, তা হল আমার এই ব্লগের সাথে জড়িত আমার এক চিত্রকার বন্ধু। পলাশ, যে তার নামের মতই সুন্দর সুন্দর সব ছবি আঁকে, আমার এই ব্লগের জন্যেও ছবি আঁকবে। আর এই ব্লগের সবচাইতে ওপরের ছবিটাও পলাশেরই আঁকা। আশা করি আমাদের বন্ধুত্ব সবসময় থাকবে।

আমি বাংলায় বরাবরই কাঁচা। বিশেষ করে বাংলা বানানে। তাই এই ব্লগের একজন সম্পাদক বা এডিটর চাই। যে কাউকে কি এতবড় একটা পদে বসানো যায়? না! একজন বিজ্ঞ ব্যাক্তি ছাড়া কাকেই বা বসাবো? অনেক ভাবনা চিন্তা করে শেষ পর্যন্ত মৈত্রীকেই এই পদে নিযুক্ত করা হল। ও প্রত্যেকটা পোস্ট পাব্লিশ করার আগে এডিট করবে এবং ওর অনুমতির পরই একটা লেখা ছাপানো হবে। একা একা আমি কোনকাজই করতে পারিনা। তাই আমার অর্ধাঙ্গিনিই আমার সাথ দেবে এবং গড়ে তুলবে আমাদের এই হযবরল।

আপনাদের ভাল লাগলে খুশি হব। মন্তব্য করতে ভুলবেন না যেন...

বাংলা ভাষা

বাংলা শুনলেই আমার জ্বর আসতো। এখোনো একটা ভয় রয়েই গেছে। তবুও এই বাংলা ভাষাই আমার প্রিয়। কত কবিতা, কত গান, কত গল্প লিখেছি আমি বাংলায়। সেই পুরাতন দিন, যখন পাতার পর পাতা চিঠি লিখতাম আমার প্রিয়তমাকে, কবিতা লিখে পাঠাতাম বাংলায়। এবার আবার সুযোগ পেয়েছি বাংলায় লেখার। এ সুযোগ আমি ছাড়ব না।

আমার বাড়ি

আমার বাড়ি আগরতলায়, ত্রিপুরার রাজধানী। ভারতবর্ষের উত্তর পূর্ব প্রান্তের ছোট্ট রাজ্য, ত্রিপুরা। জাতি উপজাতি মিলে মিশে থাকি আমরা। আমার বাড়ি ওখানে। ছোট্ট আমাদের শহর, আগরতলা। খুব সুন্দর জায়গা। আমার সবচাইতে প্রিয় শহর। তোমরা এসো - দেখে যেয়ো আমার বাড়ি।

ব্লগ সম্বন্ধীয়

এটা আমার প্রথম বাংলা ব্লগ। ব্লগ তো আমি অনেক লিখি, তবে বাংলায় এই প্রথম প্রচেস্টা। খুব ইচ্ছে ছিল বাংলায় লেখার। অনেক সফট্যার ঘাটা ঘাটি করে পেলাম এই উৎকৃসষ্ট অভ্র কিবোর্ড। এবার আমিও লিখব – বাংলা ভাষায়। মন খুলে, প্রাণ খুলে লিখব। আশা করি তোমরা পড়বে এবং উৎসাহ দেবে। ধন্যবাদ।

আমার কথা

আমার নাম তন্ময়।
আমি ভালবাসি লিখতে – কবিতা, গান, গল্প।
আর ভালবাসি নতুন নতুন মানুষের সাথে বন্ধুত্য করতে।
জীবনকে ভালবাসি, এবং হাসিমুখে অভিনন্দন জানাই জীবনের প্রতিটি মোড়কে।
সব কাজ ভিন্ন ভাবে করতে চাই – কিন্তু বিভিন্ন কাজ করেই দিন যাপন করি।
ব্লগ লেখা শুরু ক’বছর আগে, তবে বাংলা ব্লগ এই প্রথম। আমার ভালো লাগে ব্লগ লিখতে। এখানে আমি একা হলেও, আমি প্রাণ খুলে লিখতে পারি। মনের কথা গোপন রাখার কোনো দরকার হয় না। নিজেকে উজাড় করে লিখতে পারি। এটা ছাড়াও আমার আর কয়েকটা ব্লগ আছে, যাদের লিঙ্ক দেওয়া আছে এখানে।
আমার লেখা পড়ে, যদি তোমার ভালো লাগে, তো খুশি হবো। মন্তব্য করতে ভুলো না যেন!

এই যে। কই চল্লেন? এদিকে আসুন।

আমার দুটো কথাঃ

ভালবাসলে যখন তুমি আমাকে, তবে কেন বলো দূরে সরে থাক
আজকের এই জোছনা ভরা রাত, আর জীবনে ফিরে আসবে নাকো।

  © Blogger template 'Personal Blog' by Ourblogtemplates.com 2008

একদম ওপরে চলুন।